লিমা পারভীন: মাথার ভেতরের রক্ত চলাচলের তারতম্যের কারণে মাইগ্রেন হয়। রক্ত চলাচল কমে গেলে হঠাৎ করে চোখে সব অন্ধকার দেখা যায় এবং পরে রক্ত চলাচল হঠাৎ বেড়ে গিয়ে প্রচ- মাথাব্যথার অনুভূতি তৈরি হয়।
চকলেট, পনির, কফি ইত্যাদি বেশি খাওয়া, জন্মবিরতিকরণ ওষুধ, দুশ্চিন্তা, অতিরিক্ত ভ্রমণ, ব্যায়াম ইত্যাদির কারণে এ রোগ হতে পারে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রতি পাঁচজন মহিলার একজন এবং প্রতি পনেরোজনে একজন পুরুষের মাইগ্রেন হয়ে থাকে।
কারণ মহিলাদের হরমোনাল চেঞ্জ বেশি হয়। মাসিক, প্রেগনেন্সি ও মেনোপজÑ এগুলো মাইগ্রেন পেইনের সঙ্গে রিলেটেড। অনেক সময়ে মেনোপজের পর মাইগ্রেনের সমস্যা কমতে থাকে, আবার পিরিয়ডের আগে এটি বেশি হয়ে থাকে।
সাধারণ লক্ষণ : মাথাব্যথা, বমি ভাব এ রোগের প্রধান লক্ষণ। তবে অতিরিক্ত হাই তোলা, কোনো কাজে মনোযোগ নষ্ট হওয়া, বিরক্তি বোধ করা ইত্যাদি উপসর্গ মাথাব্যথা শুরুর আগেও হতে পারে। মাথার যেকোনো অংশ থেকে এ ব্যথা শুরু হয়। পরে পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়ে। চোখের পেছনে ব্যথার অনুভূতি তৈরি হতে পারে। চোখের ওপর হালকা চাপ দিলে আরাম লাগে। মাথার দুই পাশে কানের ওপর চাপ দিলে এবং মাথার চুল টানলেও ভালো লাগে। তখন শব্দ ও আলো ভালো লাগে না। কখনো কখনো অতিরিক্ত শব্দ ও আলোয় মাথাব্যথা বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন>>দীর্ঘ সময় হেডফোন ব্যবহারে কী কী ক্ষতি হতে পারে, জানেন কী?
করণীয় : মাইগ্রেন থাকলে প্রতিদিন অন্তত আট ঘণ্টা ঘুম দরকার। যেসব খাবার খেলে ব্যথা শুরু হতে পারে, যেমন কফি, চকলেট, পনির, আইসক্রিম, মদ ইত্যাদি একদম বাদ দিতে হবে। বেশি সময় না খেয়ে থাকা যাবে না। জন্মবিরতিকরণ ওষুধ যারা খায়, তাদের সেটা সেবন না করাই শ্রেয়। প্রয়োজনে অন্য পদ্ধতি বেছে নেওয়া যেতে পারে। পরিশ্রম, মানসিক চাপ ও দীর্ঘ ভ্রমণ বর্জনের মাধ্যমে মাইগ্রেন অনেকাংশে কমিয়ে আনা যায়।
আরও পড়ুন>>বিয়ের পর স্ত্রীকে একঘেয়ে লাগলে কী করবেন?
চিকিৎসা : নিউরোমেডিসিন বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে পারেন মাইগ্রেন সমস্যা নিয়ে। বারবার মাইগ্রেনের আক্রমণ কমানোর জন্য ডাক্তার সাধারণত পিজোটিফেন, অ্যামিট্রিপটাইলিন, বিটাব্লকার-জাতীয় ওষুধ কার্যকর। মাথাব্যথা শুরু হলে প্যারাসিটামল, এসপিরিন, ডাইক্লোফেনাক-জাতীয় ওষুধ ভালো। বমির ভাব কমানোর জন্য মেটোক্লোর প্রোমাইড, ডমপেরিডন-জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। এসব ওষুধে মাথাব্যথা না কমলে সুমাট্রিপটান, আরগোটামাইন-জাতীয় ওষুধে অনেক সময় যথেষ্ট স্বস্তি পাওয়া যায়।