ফাহিম শাওন: কুষ্টিয়ার খোকসায় জমির পর্চা তোলার জন্য অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার প্রমান মেলায় সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের এক দলিল লেখককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরের উপজেলা কম্পাউন্ডে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেশমা খাতুন এ আদালত পরিচালনা করেন। অভিযুক্ত দলিল লেখকের নাম শ্রী বাহুবল্লভ সরকার। তার লাইসেন্স নম্বর ২৫। সে উপজেলার মানিকাট গ্রামের বলরাম সরকারের ছেলে।
ভ্রাম্যমান আদালত সূত্রে জানা গেছে, কৃষক নিত্য রঞ্জন পাল তার নামীয় একটি জমি রেজিস্ট্রির জন্য আর এস পর্চার প্রয়োজন হয়। এ জন্য দলির লেখক শ্রী বাহুবল্লভব সরকার ওই কৃষকের কাছ থেকে ৪৫০০ টাকা হাতিয়ে নেন। বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী নিজে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)র কাছে অভিযোগ করেন।
এক পর্যায়ে দলির লেখককে ওই কর্মকর্তা তার দপ্তরের ডেকে আনেন। দলিল লেখক পর্চা তুলতে ৪৫০০ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন।
ভ্রাম্যমান আদালত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন আইনে দলিল লেখক বাহুবল্লভ সরকারকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ঘোষণা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রদীপ্ত রায় দীপন।
কৃষক নিত্য রঞ্জন পালের জামাতা বিকাশ বাছাড় জানান, তার শ্বশুর একটি মন্দির ও তার ছেলেকে ৯৯ শতাংশ জমি দান করেন। এই জমি রেজিস্ট্রির সময় আর এস পর্চা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। সাব রেজিস্ট্রার ওই পর্চার একটি সার্টিফাই কপি আনতে বলেন। আর এখানেই ঘটে বিপত্তি।
আরও পড়তে পারেন:
কয়েক মাস পর বৃহস্পতিবার সকালে পর্চার সাটিফাই কপি দিয়ে মন্দির ও ছেলের নামে দানের জমি রেজিস্ট্রির পর দলিল লেখন ওই জমি দাতার কাছে পর্চা বাবাদ ৪৫০০ টাকা দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা পরিশোধের পর বিষয়টি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)’র কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী জমি দাতা। পরে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ভ্রাম্যমান আদালত ওই দলিল লেখকে জরিমানা করেছে।
খোকসা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেশমা খাতুন বলেন, ঘুষ বানিজ্য বা অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ব্যাপারে কোন ছাড় দেয়া হবে না। কেও যদি এ ধরনের দুর্নীতি করে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, অনেকেই আমার কাছে অভিযোগ করে বলেন, সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের প্রায় প্রতিটি কাজেই অতিরিক্ত অর্থপ্রদান করে কাজ সমাধান করতে হচ্ছে। এছাড়াও হয়রানীর শিকার হচ্ছেন বেশিরভাগ মানুষ। আমি এ ব্যাপারে খুবই কঠোর। আমার কাছে দুর্নীতির কোন স্থান নেই।
এ ছাড়াও সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
উল্লেখ্য, এক সপ্তাহে খোকসা সাব রেজিস্ট্রার অফিসে দুদক অভিযান পরিচালনা করে। ওই অফিসে হানা দিয়ে নৌশ প্রহরীর পকেট থেকে ৪০ হাজার টাকা উদ্ধার করে। এছাড়াও অফিসের নানা অসঙ্গতি দেখতে পেয়েছেন বলে অভিযানিক দলের কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।