চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: সারাদেশে কোটা আন্দোলনকারীদের ‘গুম, খুন ও মিথ্যা মামলায় জড়ানোর হয়েছে দাবি করে নগরের চেরাগী মোড় এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন আন্দোলনকারীরা। এসময় পুলিশ আন্দোলনকারীদের সাউন্ড গ্রেনেড-টিয়ার শেল ছুড়ে ও লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
আজ সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেল ৩টায় নগরের জামালখান এলাকার প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতায় তা ভেস্তে যায়। পরে তারা নগরের চেরাগি মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
সমাবেশের আগে-পরে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। তবে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে চেরাগী পাহাড় মোড়ে অবস্থান নেন ২৫-৩০ জন বিক্ষোভকারী। সেখানে তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় আওয়ামী লীগের সমর্থনে নগরের চেরাগী পাহাড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরের জামালখান ঘুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে কয়েক মিনিট অবস্থান করে পুনরায় চেরাগী পাহাড়ের দিকে চলে যায়। সেখানে রাস্তার পাশে বিক্ষোভকারীরা অবস্থান করে।
এ সময় পুলিশ দুজনকে আটক করে প্রিজন ভ্যানে তুলতে চাইলে বিক্ষোভকারীরা বাধা দেন। তাঁরা প্রিজন ভ্যানের সামনে সড়কের ওপর বসে পড়েন। তবে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাঁদের নিয়ে যায়। এরপর বিক্ষোভকারীরা মোড়ের এক পাশে সড়কে বসে স্লোগান দিতে থাকেন। এভাবে ১৫ মিনিট বসে থাকার পর পুলিশ দুটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিক্ষোভকারীরা জানান, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপের পর বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। এরপর পুলিশ লাঠিপেটা করে সবাইকে সরিয়ে দেয়। এ সময় সাউন্ড গ্রেনেডে মাথায় কোতোয়ালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোশাররফ চোখে আঘাত পান। এছাড়াও একই সময় পুলিশের চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার অতনু চক্রবর্তীসহ একাধিক সদস্য আহত হয়েছে।
আরও পড়ুন ;
-
মেট্রোরেল এক বছরেও চালু করা সম্ভব হবে না: সেতুমন্ত্রী
-
রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত অফিসের সময় ৯টা থেকে ৩ টা
পরে ধাওয়া দিলে তারা বিক্ষোভকারীরা জেএমসেন হলের সামনের রাস্তা দিয়ে বের হয়ে যায়। বিকেল পাচঁটার দিকে নগরের আন্দরকিল্লায় একদল বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দুই সাংবাদিক আহত হন। তারা হলেন, দৈনিক দেশ রুপান্তরের ফটো সাংবাদিক আকমল হোসেন ও নিউজ ২৪’র ক্যামেরা পারসন মো.আবু জাবেদ।
এদিকে বিকেল তিনটার দিকে নগরের জামালখান থেকে মোবাইল চেক করে দুইজন আন্দোলনকারীসহ আটজন সদস্যকে আটক করা হয়। আটকৃতদের মধ্যে কয়েকজনের নাম জানা গেছে, তারা হলেন, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইমন, বাকলিয়া সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির আজমাঈন করিম নিহাল ও গাছবাড়িয়া ডিগ্রি কলেঝের জুলহাজ হোসেন। তাৎক্ষণিকভাবে বাকিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন ;
-
আইনি প্রক্রিয়ায় সমস্যা সমাধানের সুযোগ রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
-
ছাত্রসমাজ আদালত থেকে ন্যায়বিচার পাবে, বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের এ.ডি.সি কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, নগরের জামালখান ও চেরাগী মোড় থেকে কোতোয়ালী থানা পুলিশ ১৬ জনকে আটক করেছে। আমাদের এসি কোতোয়ালীসহ ৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হবে।