১) হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, তোমরা এমন সব কাজ কর যা তোমাদের দৃষ্টিতে চুলের চেয়েও সূক্ষ। কিন্তু আমরা রাসুলুল্লাহর যুগে এগুলো মনে করতাম ধ্বংশকারী
২) হযরত ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, একজন মুমিন গুনাহকে এভাবে মনে করে যে, সে যেন এক পাহাড়ের নিচে বসে আছে আর এটি তার মাথার উপরে ভেঙে পড়বে। অন্যদিকে পাপী তার গুনাহকে মনে করে যেন একটা মাছি তার নাকের ডগায় বসে আছে, আর এভাবে তাকে তাড়িয়ে দেয়।
উপরের কথাগুলো পর্যালোচনা করলে বোঝা যায়, ছোট ছোট গুনাহগুলো যে গুলো অমাদের গুনাহ বলে মনে হয় না, সে গুলো আমাদের জন্য কতটা ভয়ংকরী।
এটা উদাহরন দিলে বুঝবেন, বর্তমানে হরহামেশায় মেয়েরা সোস্যাল মিডিয়াতে ইচ্ছেমত ছবি পোস্ট করছে। এটা সধারন ভাবে ঐ মেয়েটি কোন গুনাহ বলে মনে করছেন না। অন্যদিকে সে যে একটা পাপে লিপ্ত হচ্ছে, এই চিন্তাটুকা তার মাথায় আসে না। কিন্তু হাদিসে কি আছে আমরা একটু দেখে নিই,
মহানবী সা: নারীজাতির শাস্তির বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ১. আমি জাহান্নামে একজন মহিলাকে তার মাথার চুল দ্বারা ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেলাম ওই সময় তার মাথার মগজ ফুটন্ত পানির ন্যায় টগবগ করে ফুটছিল।
২. একজন মহিলাকে স্বীয় স্তনে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেলাম অর্থাৎ সমস্ত শরীরের ওজন স্তনের উপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
নবী কন্যা ফাতিমা (রা) এ শাস্তির কারণ জানতে চেয়ে আরজ করলেন আব্বাজান! মহিলাদের এই ভয়াবহ শাস্তি ভোগের কারণ কি?
উত্তরে মহানবী সা: এরশাদ করলেন : ‘নারীর শাস্তির প্রথম কারণ : যে মহিলা স্বীয় মাথার চুল দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় সাজা ভোগ করতে দেখেছিলাম তার এই শাস্তির কারণ হলো, সে চলার পথে পরপুরষ থেকে নিজের চুলকে ঢেকে রাখত না। নগ্ন মাথায় পর পুরষকে দেখানোর জন্য চুল ঝুলিয়ে ঘুরে বেড়াত। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে মহিলাদেরকে মাথা ঘাড় ও বুক মোটা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন।
অবৈধ সম্পর্ক হচ্ছে নারী শাস্তির তৃতীয় কারণ। মহানবী সা: যে মহিলাকে স্তনে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়েছিলেন তার কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন : ওই নারী ছিল বিবাহিতা, সে বিবাহিতা হওয়া সত্বেও তার সম্পর্ক ছিল পরপুরষের সাথে। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে লজ্জাস্থান হেফাজতকারী মহিলাকে জান্নাতি বলে ঘোষণা করেছেন। (সূরা মু’মিনূন : ৫)।
উপরের দুটি হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, মেয়েদের চুল যদি পরপুরুষে দেখে তাহলে তার জন্য কি ভয়াবহ শাস্তি অপেক্ষা করছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, চুল লম্বা হওয়ার করনে অনেকই বিভিন্ন ধরনের ভিডিও বানিয়ে তা বিভিন্ন স্যোসাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
শুধু একবার ভাবুন, আপনার জন্য কি অপেক্ষা করছে? শুধু এই নয়, অনেক মেয়েরা রয়েছে, বিশেষ করে শহর অঞ্চলের মেয়েরা ওড়না ব্যবহার না করে, চুল দিয়ে তাদের বক্ষ ঢেকে রাখেন।
এগুলো তারা কোন গুনাহ বলে মনে করেন না। কিন্তু তারা আসলে জানতেও চান না যে পর্দা সম্বন্ধে হাদিসে কি রয়েছে।
আবার অন্য দিকে, বর্তমানে মেয়েরা ঠিক মত ওড়নাটাও পরিধান করে না। এতে তাদের বক্ষদেশ উন্মুক্ত থাকে। এতে তারা নিজেকে স্মার্ট এবং ফ্যাশন মনে করেন। কিন্তু এটা মারাত্বক গুনাহের পাশাপাশি অপরাধও বটে।
একটু ভাবুনতো, কোন নারীর উশৃঙ্খল ভাবে চলাফেরার জন্য, কোন পুরুষ যদি সেই নারীর দিকে কুনজর দেয় তাহলে দোষটা কার হবে? সেই পুরুষের পাপের ভাগিদার হবে সেই নারী। এবার সেই নারী যদি পর্দার সহিত চলাফেরা করেন তাহলে অন্তত কোন পুরুষ সেই নারীর দিকে কুনজরেও তাকাবে না।
সুতরাং, এই এই সমাজ থেকে ধর্ষণ ও ইফটিজিং এর মত রোগগুলো অনেকাংশে পর্দাহীনতায় দায়ি। আমি জানি, কোন নারী একা সমাজকে সংশোধন করতে পারবেন না।
কিন্তু একজন নারীর দেখাদেখি অন্যজন যখন পর্দা করা শুরু করবে তখন ইসলামের আদর্শও হবে অন্যদিকে সমাজকে সুন্দর একটি মাণষিকতা উপহার দেয়া যাবে।
তাই আমাদের সকলের(নারী এবং পুরুষ) উচিৎ ইসলাম ধর্মের আইন অনুযায়ী পর্দার সহিত চলাফেরা করা। তাতে ইহকালে এবং পরকালে উভয়ের জন্যই মঙ্গল।
+ There are no comments
Add yours