শিরোনাম
AJR curiar service riad newsasia24

চাকুরীর দেওয়ার কথা বলে মামলা দেন এজে আর কুরিয়ারের রিয়াদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ২০৫০ সালে বাংলাদেশের সকল জেলার বেকারদের দিবেন তিনি কর্মসংস্থান,করবেন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন । দেশের ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে কীভাবে এই দেশকে জাগিয়ে রাখা যায় সেই গবেষণা থেকেই একটি থিউরি আবিষ্কার করেন এজে আর কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রতারক সামসু উদ্দিন আহমেদ রিয়াদ(৪৫)।

নিজ থিউরি অনুযায়ী প্রতারক রিয়াদ বিভিন্ন জেলার কমশিক্ষিত বেকাদের চাকুরী দেওয়ার কথা বলে নিয়ে আসেন ঢাকায় । চাকুরীর দেওয়ার কথা বলে প্রতারক রিয়াদ নেন ব্ল্যাঙ্ক চেক ও ৩/৪ টা করে ফাঁকা স্ট্যাম্প। চাকুরীতে কিছুদিন যেতে না যেতে বিভিন্ন অজুহাতে রিয়াদ তাদের করেন চাকুরীচ্যুত।

পরবর্তিতে রিয়াদ ফিরেন তার পূর্ণরূপে, ফাঁকা চেক ও স্ট্যাম্পে মোটা অংকের টাকা বসিয়ে রিয়াদ দেন চেক ডিজনার মামলা। চেক মামলায় রায় হয়ে যাবে ভয় দেখিয়ে রিয়াদ আদায় করেন টাকা। কুরিয়ার সার্ভিস নয় যেনো মামলার হাট বসিয়েছেন রিয়াদ। যে-হাটে একবার ক্রেতা হয়ে ঢুকলে আপনাকে মামলা নিয়ে বাড়ি যেতে হবে। মামলা ছাড়া আপনাকে বাড়ি ফিরতে দিবে না রিয়াদ।

সাম্প্রতিক সময়ে মাসুদ হোসাইনসহ বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী ডিএমপির পুলিশ কমিশনার বরাবর অভিযোগ করলে উঠে আসে এমনই এক চঞ্চল্যকর তথ্য।

এই বিষয়ে এজে আর কুরিয়ার সার্ভিস এর সাবেক কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে একটা চুরির মামলা দিয়েছেন ১০ লক্ষ টাকা চুরির মামলায় ১ মাস জেল খেটে জামিনে বের হলে পূনরায় আমায় দেয় আরেকটি চেকের মামলা উক্ত চেক মামলায় দেখানো হয় ১৩ লক্ষ টাকা, চুরির মামলা কোনো ডকুমেন্ট দেখাতে পারেনি বলে মামলাটি আদালত থেকে খালাস হয়ে যায় ।

Courier service is not a court of law! newsasia24

আরও পড়ুন: 

পরবর্তিতে আমাকে উক্ত চেকের মামলা রায় হয়ে যাবে বলে ভয় দেখি এক পর্যায়ে আমি ৪ লক্ষ টাকা রফাদফা করি, ৪ লক্ষ টাকা আমি গ্রামে বাড়ি থেকে দার দেনা লোন করে এনে দিলে ও এখনও আমায় দেয় নি কোনো লিখিত কাগজ,কাগজ চাইলে ও বলে পরে আসেন ।

আরেকজন ভুক্তভোগী এজেআর কুরিয়ার সার্ভিসের সাবেক কর্মকর্তা রুবেলের কাছে জানতে চাইলে তিনি নিউজ এশিয়া২৪কে বলেন,আমাকে প্রথমে ৮ লক্ষ টাকার একটি চুরির মামলা দেয় রংপুরে আমি ৪৪ দিন কারাগারে ছিলাম,জামিনে বের হওয়ার পর ঐ যে আমার চাকুরী তে যোগদানের সময় একটি ব্ল্যাংঙ্ক চেক ছিলো সেই চেকে আমাকে আবার ১৬ লক্ষ টাকার আরেকটি মামলা দেয় ঢাকার আদালতে ।মামলা তুলার জন্য বারবার অফিসে গেলে আমার কাছ ১০ লক্ষ টাকা দাবী করে।

এজে আর কুরিয়ার সার্ভিসের আরেক ভুক্তভোগি সাবেক কর্মকর্তা মফিজ উদ্দিন(২৫) সুপারভাইজ তিনি বলেন এজেআর কুরিয়ার সার্ভিসের মামলাবাজ এমডি আমাকে মোট ৫ টা মামলা দিয়েছে একটা চুরির মামলা,একটা হাফ মার্ডার মামলা,একটা অপহরন মামলা,২ টা চেক এর মামলা ।সুধু দর্শন মামলা দেওয়া বাদ ছিলো বলে জানান তিনি ।

আরেক ভুক্তভোগী মাসুদ হোসাইন কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি ২০১১ সাল থেকে এজেআর কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মরত ছিলাম,চাকুরী তে নিয়োগের সময় কোম্পানিটি আমার একটি ব্লাঙ্ক চেক রাখে ফেরতযোগ্য বলে।কোম্পানীটির বিভিন্ন অনিয়ম দূর্নীতি দেখে চাকুরী থেকে অব্যহতি দেই ।

অব্যহতির ২ বছর পর কোম্পানীটি তে থাকা আমার ঐ ব্লাঙ্ক চেকে আমাকে ২৯ লক্ষ ২৭ হাজার ৬০০ টাকার একটি মামলা দেয় ।কাগজে কলমে উল্টো কোম্পানীটির কাছে আমি ৫ মাসের বেতন পাই সেটা না দিয়ে উল্টো আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে প্রতিনিয়ত।তাই আমি কোম্পানীর মামলাবাজ মালিক রিয়াদের যথাযত শাস্তি দাবী করছি।

এজে আর কুরিয়ার সার্ভিসের সাবেক জেনারেল ম্যানেজার(জিএম) মাহবুবুর রহমান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি কোম্পানীটি তে শুরু থেকে কাজ করে আসছি জিএম হিসেবে,কোম্পানীতে নিয়োগের সময় আমরা প্রতিটি স্টাফদের কাছ থেকে ২ বা ৩ টি ব্লাঙ্ক চেক ও ফাঁকা ৩/৪ করে স্ট্যাম্প নিয়ে থাকি,যারে করে ঐ স্টাফ গুলো চাকুরী ছেড়ে চলে যেতে চাইলে বা চলে গেলে আমরা ঐ চেকে তাদের নামে মোটা অংক বসিয়ে মামলা দিয়ে দেয় মালিক রিয়াদ সাহেবের পরামর্শে।স্টাফদের চেক ও স্ট্যাম্প রিয়াদ তার কাষ্টোরিতে রাখে বলে ও জানান তিনি।

আরও পড়ুন: 

ভ্যাট ট্রেক্স কিভাবে দেয় সেটা জানতে চাইলে তিনি বলে কি আর বলবো ভাই মানুষের ভিতরে একটা মনুষ্যত্ববোধ থাকে না তার ভিতরে মনুষ্যত্ববোধ ও নাই ।রিয়াদ সাহেব সরকার’কে কি পরিমান ভ্যাট ফাঁকি দেয় তা আপনাদের বলে বুজাতে পারবো না।মাসে তার ইনকাম ১২ কোটি টাকা সরকার কে ভ্যাট দেয় রিয়াদ ১ লক্ষ টাকা।

স্থাপনার ভ্যাট না দেওয়ার জন্য সারা বাংলাদেশে প্রতিটি অফিসের ডিড দুই নাম্বার করছে সরকার কে ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া জন্য ।বরিশাল সহ বেশ কয়েক জেলায় এরই মধ্য ভ্যাটের লোক হানা দিয়ে তার আসল রহস্য উদঘাটন করে পেলেছে কুড়িগ্রামে এরই মধ্যে দুই নাম্বার ডিট দেওয়ার জন্য বড় অংকের জরিমানা ও দিয়েছে রিয়াদ সাহেব। হাজারীবাগ অফিসের ভাড়া দেখায় ৬ হাজার টাকা হাজারীবাগ অফিসের ভাড়া দেয় ৬ লক্ষ টাকা ।মালিটোলা অফিসের সেল আছে ৩০ লক্ষ টাকা ঐখানে সেল দেখায় ১৫ হাজার টাকা।

আরেকটা গুরুত্বপূন্য তথ্য হলো এজেআর কুরিয়ার সার্ভিসের ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে তার ফিটনেস বিহীন কাবার ভ্যান এর সংখ্যা একশত(১০০) এর অধিক ।ফিটনেস না থাকা সত্তেও এই কাভারভ্যান গুলো সারা বাংলাদেশে তার মাসিক হারে চলে যেটাকে আমরা মান্তলী বলি।রাস্তায় সার্জেট পুলিশ ধরলে তাদের একটি মান্তলী কাগজ দেখায় যেই কাগজ প্রতিটি গাড়িতে থাকে ।মাস শেষে প্রতিটি সার্জেন্ট টিআইদের বিকাশ নাম্বার টাকা পাঠিয়ে দেন রিয়াদ সাহেব।

যে পরিমান অনিয়ম রিয়াদ সাহেব করেন তা আপনাদের বলে বুজানো যাবে না তবে এইভাবে একটা কোম্পানী চলতে পারে না।

সরজমিনে খবর নিয়ে জানা যায়, প্রতারনার মাধ্যমে রিয়াদ আয় করেছেন কোটি কোটি টাকা ।আয়ের মূল উৎস হলো সারাদেশে বিভিন্ন জেলা থেকে মাদক আনা-নেওয়া ডেলিভারী করা,মেয়াদ উত্তীর্ন ওষুধ,মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার,ট্রেক্স ফাঁকি দেওয়া সিগারেটসহ সকল ধরনের অবৈধ মালামাল রিয়াদ দেশের বিভিন্ন জেলায় পৌছে দিয়ে রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছে । বেশ কয়েকবার রিয়াদের বিভিন্ন শাখা অফিস থেকে বিপুল পরিমান মাদক,মেয়াদ উত্তীন ভেজাল ওসুধ মাদকসহ নানা অবৈধ মালামাল জব্দ করেছে র‍্যাব,পুলিশ,মহানগর ডিবিসহ মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

প্রতারনার টাকায় রিয়াদ ঢাকাসহ নিজ এলাকা নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলায় ও নিজ গ্রামে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড় ও ক্রয় করেছেন বিঘায় বিঘায় জমি ।আত্মসাৎ ও প্রতারনার টাকায় রিয়াদ চড়েন কালো রংয়ের ল্যান্ড ক্রুজার প্যারাডো গাড়িতে ।

আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়া প্রতারক রিয়াদ এর এমন উত্থান দেখে হতবাগ তার নিজ এলাকার লোকজন,অনেকে বলছেন আলাউদ্দিন এর আর্চর্য চেরাগ পেয়েছেন রিয়াদ । তা নাহলে এতো তাড়াতাড়ি রিয়াদ কিভাবে হয় এতো সম্পদ এর মালিক ? নতুন হাতিয়ার হিসেবে রিয়াদ নেমেছেন এখন রাজনীতির মাঠে দুই হাতে টাকা উড়াচ্ছেন রাজনীতির মাঠে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা ।

সেনবাগ উপজেলার বেশ কয়েকজন নবীন ও প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, রিয়াদের সাংগঠনিক কোনো পদ-পদবী নেই অবৈধ উপায়ে কিছু টাকা ইনকাম করছে তা দিয়ে নিজেকে নেতা বানানোর মিথ্যা চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি।মেম্বার হওয়ার যার ক্ষমতা নেই তিনি কিভাবে হবে উপজেলার চেয়ারম্যান ?এটা তো ভাবায় যায় না।এমন লোক কে আমরা সবাই বয়কট করলাম ।

আরও পড়ুন:

প্রতারক রিয়াদের বিরুদ্ধে রয়েছে সরকারি কর ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করার অভিযোগ,গত ৭/২/২০১৮ সালের কাস্টমস,এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট,ঢাকা কর ফাঁকির দায়ে রিয়াদ কে (৫,৩২,৬২,৬২৫,৬৪) পাঁচ কোটি বত্রিশ লক্ষ বাষট্টি হাজার ছয় শত পঁচিশ টাকার ভ্যাটের মামলা ।যা না দিয়ে রিয়াদ করেছে ব্যবসা।

রিয়াদের বিরুদ্ধে রয়েছে ২ অক্টোবর-২০২০ সালের ৪২০/৪৬৮/৪৭৩/৫০৬/১০৯ পেনাল কোর্ড যোগসাজসে সরকারী সিল-স্বাক্ষর জালিয়াতির মামলা (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়,ডিএমপি কমিশনার,ঢাকা রেন্জ ডিআইজির সীল-স্বাক্ষর জালিয়াতির মামলা ।এতো অভিযোগের পর ও প্রতারক রিয়াদ আছেন বহাল তবিয়তে ?

প্রতারক রিয়াদ গড়ে তুলেছেন অপরাধ চক্র ।তার চক্রের অন্যতম মূলহোতা গিয়াস উদ্দিন শেখ,যার বিরুদ্ধে রয়েছে হত্যা মামলাসহ প্রতারনার মামলায় বেশ কয়েকদিন গিয়াস উদ্দিন শেখ ও আল-মামুন জেল খেটেছেন।কিন্তু জেল খাটে নি প্রতারক রিয়াদ ,হাইকোর্ট থেকে জামিন নিলে ও উক্ত মামলার সার্জসিট ভুক্ত আসামী রয়ে গেছেন প্রতারক সামসু উদ্দিন রিয়াদ ।উক্ত চক্রের সদস্য আল মামুন,শিমুল,রাকিব নুরে আলমসহ রয়েছেন বেশ কয়েকজন।

চেক মামলার রায় করতে পারলে টাকার গুলো ভাগ-ভাটোয়ারা হয় সবার মধ্য এমনই অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে মহানগর পুলিশ ।

আরও পড়ুন:

এজে আর কুরিয়ার সার্ভিসের প্রতারক রিয়াদের বিষয়ে জানতে রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃআশরাফ বলেন,এমই এক অভিযোগ আমরা ডিএমপি কমিশনার স্যারের অফিস থেকে পেয়ে আমরা তদন্ত করছি সত্যতা পেলে নিয়মিত মামলা নিবো।

এই বিষয়ে রিয়াদের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদউত্তর দিতে পারেননি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *