কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার খোকসায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ৭টি বাড়ি পুড়ে গেছে। জানা গেছে, রান্নায় ব্যবহার করা লাকড়ি (খড়ি) থেকে জ্বলে ওঠা আগুনে বয়বৃদ্ধ হতদরিদ্র মুজাম আলীর দু’টি ঘরই পুড়ে যায়। তার বাড়ির আগুনে পাশে বসতকারী ৭ ভূমিহীন পরিবারের সব ভস্মে পরিণত হয়ে গেছে।
আজ বুধবার সকাল ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার খোকসা পৌর এলাকার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাঁধপাড়ায় হালিমা মসজিদ সংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিতে বসবাসকারী ভূমিহীনদের বসত বাড়িতে আগুন লাগে।
মুহুত্যের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পরে ভূমিহীন মিলন, রাসেল, আরিফ, আব্দুল হক, সিরাজল ইসলাম, আজব আলীর বাড়িতে। এসময় একাধিক বাড়ির রান্না ঘরে গ্যাস সিলেন্ডার বিস্ফোরিত হয়। তাপপ্রবাহ ও গ্যাসের কারণে আগুনের তেজস্বক্রীয়া বেড়ে যায়।
গড়াই নদী থেকে ১০০ মিটার দূরের এ ভূমিহীনদের বাড়িসহ আসে পাশে পানি না থাকায় স্থানীয় নারী পুরুষরা মাটি ও বালি দিয়ে আগুন নেভাতে চেষ্টা করে। তাদের সাথে যোগ দেয় খোকসা ও কুমারখালীর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্ত ভোগীদের সূত্রে জানা যায়, ভূমিহীন হতদরিদ্র মুজাম আলীর রান্না ঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। ইতোমধ্যে খোকসা ফায়ার সাভির্সের একটি ইউনিটের কর্মীরা ঘটনা স্থলে পৌছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে।
প্রায় আধাঘন্টা পর কুমারখালী ফায়ার ষ্টেশনের আর একটি ইউনিট আগুন নেভাতে যোগ দেয়। স্থানীয় জনতা ও ফায়র সার্ভিসের কর্র্মীরা প্রায় দেড় ঘন্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে। ততক্ষনে ভুমিহীনদের প্রায় অর্ধকোটি টাকার ঘরবাড়ি, আসবারপত্র, টিভি ও ফ্রিজ ভস্ম হয়ে যায়।
অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ মুজাম জানান, সকালে তার স্ত্রী একমুঠো ভত্তা ভাত রান্না করে রেখে অন্য বাড়িতে কাজে যায়। তিনি ঘুমিয়ে ছিলে। তার বাড়ির রান্নার লাকড়ি থেকে মিনমিন করে লাগা আগুনে তার সব পুড়ে গেছে। এখন মাথা গোজার জায়গাও রইল না। তিনি কোথায় রাত কাটাবেন এই নিয়ে তার চিন্তার অন্ত নাই।
আরও পড়ুন:
-
খোকসাতে সয়লাব মাদক ব্যবসা; পর্ব-১
-
খোকসায় ভাগ্নের ইটের আঘাতে নিহত মামা
-
ভারতের ১০০ স্কুলে বোমা হামলার হুমকি
-
ছুটিই থাকছে স্কুল-মাদরাসা
ঘটনা স্থলে দাঁড়িয়ে বিলাপ করছিল রাফিজা আক্তার। তার বাবা কাকা ও দাদার সব পুড়ে গেছে। কিছুই বাঁচাতে পারেনি। তার বাবা – কাকারা ঢাকায় কাজ করেন। সেখানেই পরিবার পরিজন নিয়ে বাস করেন। কিন্তু বাড়িতে সবই রেখে গিয়েছিল।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আননুর যায়েদ জানান, আগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হওয়ার পরপর পুলিশ উপস্থিত হয়। ৭ পরিবারের সব পুড়ে গেছে। অল্পের জন্য আরো ৫টি বাড়ি রক্ষা পেয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপণের জন্য পুলিশের একটি কমিটি কাজ করছে।
খোকসা ফায়ার সাভির্সের স্টেশন অফিসার নজরুল ইসলাম জানান, অগ্নিকান্ডের সূত্রপাতের খবর পেয়ে তারা ঘটনা স্থলে পৌচ্ছায়। পরে কুমারখালী ফায়ার সাভিসের আরও একটি ইউনিটকে ডাকা হয়। দীর্ঘ সময় চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রনে আনা গেছে। অগ্নিকান্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপণ করা সম্ভব হয়নি।