নিউজ এশিয়া২৪ ডেস্ক: মুসলিমদের জন্য ঈমান আনার পরেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আর জামাতে নামাজ পড়া সুন্নতে মুয়াক্কাদা।
কেউ কেউ এটাকে ওয়াজিবও বলেছেন। হাদিস শরিফে জামাতের প্রতি বিশেষভাবে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে ।
এক হাদিসে এসেছে, ‘জামাতের নামাজ একাকি নামাজের চেয়ে ২৭ গুণ বেশি মর্যাদা রাখে। ’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৫; মুসলিম, হাদিস : ৬৫০)
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে মধ্যে এশা ও ফজরের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। এ দুই সময়ে মানুষ সাধারণত পরিবারের সঙ্গে সময় কাটায় ও বিশ্রাম করে।
ফলে জামাতদুটিতে যথেষ্ট অবহেলা ও গাফিলতি হয়ে থাকে। এজন্য হাদিসে এর প্রতি বিশেষভাবে উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করা হয়েছে। উবাই ইবনে কাব (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘একবার মহানবী (সা.) আমাদের ফজরের নামাজ পড়িয়েছেন। সালাম ফিরিয়ে জিজ্ঞেস করেছেন, অমুক কি আছে? লোকেরা বলল, নেই।
তিনি বললেন, এ দুই নামাজ (এশা ও ফজর) মুনাফিকদের জন্য সবচেয়ে কঠিন। তোমরা যদি জানতে যে এই দুই নামাজে কী পরিমাণ সওয়াব নিহিত রয়েছে, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাতে আসতে। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৫৫৪)
সুন্নত নামাজের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ফজরের দুই রাকাত সুন্নত। হাদিসে এর প্রভূত ফজিলত বর্ণিত হয়েছে, যা অন্য সুন্নতের ক্ষেত্রে হয়নি। এক হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘ফজরের দুই রাকাত (সুন্নত) দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়ে উত্তম। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৭২৫)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘শত্রুবাহিনী তোমাদের তাড়া করলেও তোমরা এই দুই রাকাত কখনো ত্যাগ করো না। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১২৫৮)
আরও পড়ুন>> জুমআর দিনের ফজিলতপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলো জেনে নিন
ফজরের সময় জাগ্রত হওয়ার কিছু কৌশল তুলে ধরার হলো,
আল্লাহকে চেনা: আ্লাহতে চিনতে ও জানতে হবে। আল্লাহর বড়ত্ব ও মহত্ব সম্পর্কে জানতে হবে। আপনি যদি জানেন যে অঅপনি কার ইবাদত করছেন? তাহলে ফজরে ঘুম থেকে উঠবেনই।
আন্তরিকতার সাথে প্রতিজ্ঞা: ফজরের নামাজের জন্য জেগে উঠার ব্যাপারে আন্তরিকার সাথে প্রতিজ্ঞা করতে হবে। য্ভোবেই হোক আমি জেগে উঠবোই। এমন ভাবে প্রতিজ্ঞা করতে হবে। তবে এটা ভাবা যাবে না যে, যদি উঠতে পারি তাহলে উঠবো, বরং এভাবে ভাবুন যে, আমি ফজরের সময় জেগে উঠবোই, ইনশাল্লাহ।
ওজু করা: ঘুমাতে যাওয়ার আগে ওজু করার অনেক ফজিলত রয়েছে। পাক-পবিত্র হয়ে ঘুমালে অনেক অনিষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। ফেরেস্তারা আপনার কাছে আসতে পারবে। এছাড়াও মহানবী (সা.) ঘুমাতে যাওয়ার আগে ওজু করার ব্যাপারে তাগিদ দিয়েছেন। মহানবী (সা.) বলেছেন, যখন তুমি বিছানায় যাবে তখন ওজু করবে। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৪৮৮৪)
বিতরের নামাজের পর দোয়া: শেষ রাতে উঠার অভ্যাস না থাকলে বিতরের নামাজ আদায় না করে ঘুমাবেন না। আর বিতরের নামাজ আদায়ের সময় আল্লাহর কাছে অনুনয়-বিনয় করুন, যাতে তিনি আপনাকে ঘুম থেকে জেগে উঠতে সাহায্য করেন।
আরও পড়ুন> মসজিদের ইমাম-খতিবদের সম্মানী তিনগুন বাড়ানোর আশ্বাস
কোরআন পাঠ করা: ঘমাতেযোওয়ার কোরঅন পাঠ করার অনেক সওয়াব রয়েছে। আল-কোরআন টাঠের মাধ্যমেই মাধ্যমে দিনের সমাপ্তি অবশ্যই আপনাকে ফজরের নামাজের জন্য জেগে উঠার দিকে নিবদ্ধ করবে। ঘমাতে যাওয়ার আগে সুরা সাজদাহ ও সুরা মূলক পড়ে ঘুমাবেন। মহানবী (সা.) এ ব্যাপারে বলেছেন, ঘমাতে যাাওয়ার আগে এ দুটি সুরা পড়ে ঘুমানোর অনেক ফজিলত রয়েছে।
ফজর নামাজের ফজিলত পুরস্কার: মুনাফেকীর হাত থেকে বেচে যাবেন, কিয়ামতের মাঠে আল্লাহর সামনে আলোকিত হয়ে দাঁড়ানো, সারাাদিন আল্লাহর হেফাজতে থাকা, অলসতা কেটে যাওয়া ইত্যাদি পুরস্কারের কথা স্মরন করুন। এটা আপনাকে ফজরে উঠতে সাহায্য করবে।
বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের জাগিয়ে দেওয়ার জন্য বলা: পরিবারের অনান্য সদস্য কিংবা বন্ধুদের বলুন আপনাকে জাগিয়ে দিতে। একে অপরকে জাগিয়ে দেয়ার জন্য সাহায্য করুন। যদি আপনি আগে জেগে উঠেন, তাহলে অন্যদেরও জাগিয়ে তুলুন।
আরও পড়ুন:
+ There are no comments
Add yours