নিউজ এশিয়া২৪ ডেস্ক: আমাদের প্রায় সবারই মনের মধ্যে একটা প্রশ্ন জাগে, মিমরের নাম ইজিপ্ট কেন? পিরামিডের কারণে বিখ্যাত প্রাচীন সভ্যতা নীলনদ বিধৌত দেশ মিশর। যেখানে হাজার হাজার বছর পুরনো সব পিরামিড রয়েছে। যেন কালের সাক্ষী দেশটির প্রতিটি স্থাপনা ।
মিশর মানেই মমি আর দাঁড়িয়ে থাকা পিরামিডের রহস্য। যার রহস্য প্রত্নতাত্ত্বিকরা এখনো উন্মচন করতে পারেননি।
মিশরের ইতিহাস বেশ প্রাচীন, সমৃদ্ধ, এবং রহস্যময়। মিশরেরও ছিল বিভিন্ন নাম। বর্তমানে এর প্রাতিষ্ঠানিক নাম জমহুরিয়া মিশর আল-আ্যারাবিয়া বা আরব প্রজাতান্ত্রিক মিশর।
মিশরীয়রা তাদের দেশকে বলে মিশর, যদিও নামটি কায়রোর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে। সাধারণভাবে, কায়রোর লোকেরা মিশর বলতে সমগ্র দেশকে বুঝায়, কিন্তু কায়রোর বাইরের অধিবাসীরা মিশর বলতে কায়রোকে নির্দেশ করে।
তবে মিশর বললেও ইংরেজিতে একে বলা হয় ইজিপ্ট। মিশরীয়রাই তাদের দেশকে ‘মিশর’ বলে ডাকে।
সুপ্রাচীন কালে, মিশরে যখন হায়ারোগ্লিফ ভাষা প্রচলিত ছিল, মিশরকে বলা হত কেমেট, কালো মাটি বা কৃষ্ণ ভূমি। কারণটা হলো মিশরের পাশ ঘেঁষে চলা নীলনদের তীরের মাটি ছিল কালো।
আর এর অধিবাসীরা নিজেদেরকে বলতো, কৃষ্ণ ভূমির মানুষ। নীলনদের অববাহিকার উর্বর মৃত্তিকাকে নির্দেশ করতে কেমেত শব্দটির উৎপত্তি।
সে সময় মিশরকে দেশরেত বা লোহিত ভূমিও বলা হতো। মিশরের বিশাল অংশ জুড়ে থাকা মরু অঞ্চলকে নির্দেশ করতে এ নামটির প্রচলন। পরবর্তীতে মিশরীয়রা তাদের দেশকে বলতো, হক্ট-কা-পথ।
নামটি বর্তমান মিশরের মেমফিস এলাকা বা সমগ্র মিশরের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হত। পথ প্রাচীন মিশরীয় এক দেবতার নাম।
মিশর অভিযানের পর গ্রিকরা হক্ট-কা-পথ নামটি পরিবর্তন কর রাখে এজিইপ্টাস। গ্রিকরা তাদের সাহিত্যে এ নামটি ব্যবহার করে প্রাচীন এক কাল্পনিক রাজা, নীল নদ এবং সমগ্র দেশের নাম হিসেবে।
ধারণা করা হয় রাজাটি ছিলেন রামাসিস। হোমারের অডিসি’তে এজিইপ্টাস নামটি পাওয়া যায়। সম্ভবত শব্দের শুরু ও শেষে মিশরীয় ইংরেজি এইচ বর্ণটি সঠিক উচ্চারণ করতে না পেরে গ্রিকরা এ পরিবর্তনটি করেছিল।
এজিইপ্টাস থেকে আরো কিছু পরিবর্তনের পর ইংরেজি ভাষায় দেশটির এখনকার নাম ইজিপ্ট।
বর্তমানে মিশরীয়রা তাদের দেশকে মিশর নামে অভিহিত করে। মিশর আরবি শব্দ, যার মানে সরকার ও আইন-কানুন বিশিষ্ট রাষ্ট্র। কিছু কিছু বর্ণনায় (যদিও তা অকাট্য নয়) পাওয়া যায়, মিশর হচ্ছে পবিত্র নবী নূহের পৌত্র, যিনি নবীর সাথে মহাপ্লাবনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: চাঁদকে ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ ঘোষণার দাবি
নবী প্রার্থনা করেন, মিশর এবং তার সন্তান-সন্ততি যেন তাদের বসবাসকারী ভূমিতে নেতৃত্ব দেয় এবং সময় যেন তাদের পরাভূত করতে না পারে। মিশরের নামানুসারে সেই অভীষ্ট ভূমির নাম হয় মিশর।
কেউ কেউ বলেন, মিশরের উৎপত্তি প্রাচীন শব্দ মিজেরিয়াম থেকে। যা আবার এম- ডিআর থেকে উদ্ভূত। এম- ডিআর সেই সময় প্রাচীন মিশরকে নির্দেশ করত।