আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে এখন পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি), সেনা ও পুলিশসহ ২৬৪ জন বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
আজ মঙ্গলবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নতুন করে আরও ৩৫ জন যোগ হয়ে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে।
২৬৪ জনের মধ্যে রয়েছে বিজিপি সদস্য, সেনা সদস্য, সিআইডি, পুলিশ, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, ইমিগ্রেশন সদস্য ও বেসামরিক নাগরিক। নতুন আশ্রয় নেওয়া ৩৫ জনের পরিচয় শনাক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন নবনিযুক্ত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।
তিনি বলেন, গতকাল (সোমবার, ০৫ ফেব্রুয়রি) রাত পর্যন্ত ১১৫ জন মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি সদস্য, সেনা সদস্য আত্মসমর্পণ বা আমাদের কাছে আশ্রয় নিয়েছেন।
আরও পড়ুন:
আজ (মঙ্গলবার) সকালে আরও ১১৪ জন যোগ হয়েছেন। মোট ২২৯ জন আশ্রয় নিয়েছেন। পরবর্তীতে দুপুরের মধ্যে আরও ৩৫ জন যোগ হয়ে ২৬৪ জনকে আমরা আশ্রয় দিয়েছি।
বিজিবি জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, যারা অস্ত্রসহ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন, তাদের অস্ত্র জমা নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়েছে।
এ নিয়ে মোট ২২৭ জন বিজিপি সদস্য কক্সবাজার বিজিবি ব্যাটেলিয়নের অধীনে আছেন। অন্যদিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং বিওপিতে আরও দুই বিজিপি সদস্য রয়েছেন।
বিজিবি জানায়, সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত টহল ও চেকপোস্ট বৃদ্ধি করা হয়েছে। কোনো রোহিঙ্গাকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। দেশের স্বার্থে সীমান্তে সার্বক্ষণিক নজরদারি বৃদ্ধি করেছে বিজিবি।
এর আগে, সোমবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা পর্যন্ত বিজিপির ১০৬ জন্য এবং রাত পর্যন্ত ১১৫ জন মিয়ানমার বিজিপি সদস্য পালিয়ে আসার তথ্য জানায় বিজিবি।
এদিকে মিয়ানমারের সীমান্ত থেকে আসা মর্টার শেলের আঘাতে বান্দরবানে দুইজন নিহত হন। সোমবার দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউপির চার নম্বর ওয়ার্ডের জলপাইতলি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হন ওই এলাকার বাদশা মিয়ার স্ত্রী হাসিনা বেগম (৫২)। এছাড়া অপর নিহত রোহিঙ্গা পুরুষের (৫৫) পরিচয় জানা যায়নি।
সম্প্রতি বিভিন্ন জায়গায় জান্তার অনুগত সেনাদের পরাজয়ের খবর আসছে। এমনকি অনেক জায়গায় সেনাবাহিনীর ঘাঁটি ও নিয়ন্ত্রিত এলাকাও দখলে নিতে শুরু করেছেন বিদ্রোহীরা।
এ নিয়ে তীব্র লড়াইয়ের মধ্যে ০৪ ফেব্রুয়ারি সকালে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রথম দফায় বাংলাদেশে প্রবেশ করেন বিজিপির ১৪ জন সদস্য। এরপর দফায় দফায় ওই সীমান্ত দিয়ে ঢুকতে থাকেন বিজিপির সদস্যরা।
আরও পড়ুন:
কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মো. মিজানুর রহমান জানান, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে তীব্র সংঘর্ষের মধ্যে সেখানে চাকমা সম্প্রদায়ের প্রায় চারশ জন এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কিছু লোক জড়ো হয়েছে । এ অবস্থায় ওই চাকমা-রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অবশ্য সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এদিন জাতীয় সংসদে বলেছেন, মিয়ানমার সীমান্তের পরিস্থিতি খুবই নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। একইসঙ্গে সীমান্তে সশস্ত্র বাহিনীকে ধৈর্য ধরতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Follow