নিউজ এশিয়া২৪ ডেস্ক: স্বামীর দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়েছিলেন দুই সন্তানসহ স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার (৩৫)। দুই সন্তানের মৃত্যুর চারদিন পর স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার মারা গেলেন।
শনিবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান ।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ওসি তহিদুল ইসলাম সুমাইয়া আক্তারের মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত ২৮ নভেম্বর ভোরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের বশিকপুর গ্রামের চতল্লা বাড়ির অটোরিকশাচালক কামাল হোসেন তার বসতঘরে আগুন দেন। এতে স্ত্রীসহ দুই সন্তান দগ্ধ হন।
ঘটনার রাতেই মৃত্যু হয়েছে সাত বছর বয়সী শিশু কন্যা আয়েশা আক্তারের। পরদিন মারা যায় শিশুপুত্র আবদুর রহমান।
এ ঘটনার অভিযোগে পুলিশ কামাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে। পরে দায় স্বীকার করে ২৮ নভেম্বর বিকেলে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।
এ ঘটনার দুইদিন পর সুমাইয়া আক্তারের বাবা বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বলেন, কামাল হোসেনের সঙ্গে তার স্ত্রীর পারিবারিক কলহ চলছিল। স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে একটি সেমিপাকা টিনশেড ঘরে থাকতেন তিনি।
গভীর রাতে স্ত্রী এবং দুই সন্তান ঘুমিয়ে গেলে কামাল ঘরের বাইরে এসে দরজা বন্ধ করে আগুন লাগিয়ে দেন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মেয়ে আয়েশা আক্তার মারা যায়। স্ত্রী সুমাইয়া এবং শিশুপুত্র আবদুর রহমানকে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পরে সেখান থেকে ইউনিয়ন পরিষদের “স্বপ্নযাত্রা” অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। ওইদিন দুপুরের দিকে শিশু আবদুল রহমান চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। শনিবার দুপুরে তাদের মা সুমাইয়া আক্তারও মারা যায়।
তিনি আরও বলেন, মরদেহ এখনও নিয়ে আসা হয়নি। শুনেছি ওই হাসপাতালেই তার ময়নাতদন্ত হবে। এরপর গ্রামের বাড়িতে জানাজা হবে। সুমাইয়ার বাবার বাড়ি সদর উপজেলার মান্দারীতে।
পোদ্দার বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান জানান, ঘটনার দুইদিন পর ৩০ নভেম্বর সুমাইয়ার বাবা গোলাম মোস্তফা বাদি হয়ে কামাল হোসেনসহ অজ্ঞাত আরও দুইজনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় কামাল এখন কারাগারে রয়েছেন।
আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি আরও জানান, কামালের স্ত্রী সব সময় তার সংসার না করার হুমকি দিতেন। দুই সন্তানকে নিয়ে তার স্ত্রী অন্যত্র চলে যাওয়ার কথাও বলতেন।
এ নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন কলহ চলে আসছিল। ১৫-২০ দিন ধরে কামাল হোসেনের সঙ্গে তার স্ত্রী কথা বলতেন না। এ কারণে কামাল ঘরে আগুন দিয়ে তাকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন।