নিউজ এশিয়া২৪ ডেস্ক: কোন কারন ছাড়াই প্রবাসীর স্ত্রী ও দুই ছেলেকে হত্যা করেন ভাগনি জামাই।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে ঘরে ঢুকে প্রবাসীর স্ত্রী ও দুই ছেলেকে গলা কেটে হত্যা করেন ভাগনি জামাই ।
নিহত জেকি আক্তারের ভাগনি জামাই জহিরুল ইসলাম পারিবারিক কলহের জেরে এ হত্যা করেন।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) জহিরুল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (বাঞ্ছারামপুর) আদালতের বিচারক সাগত সৌম্যের কাছে হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
আজ বিকেলে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) সোনাহর আলী শরিফ।
পুলিশ সুপার সিরাজুল ইসলাম জানান, নিহত জেকি আক্তারের বড় বোন শিল্পী বেগমের মেয়ে আনিকার সঙ্গে বিয়ে হয় আসামি জহিরুলের।
তবে বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক ঝামেলা চলছিল।
এতে অনামিকাবার বার তার বাবার বাড়িতে চলে যেতেন।
কিছু দিন আগেও শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে আসেন অনামিকা।
অনামিকাকে ফিরিয়ে নিতে ও কলহ মীমাংসার জন্য গত মঙ্গলবার সকালে জহিরুল তার খালা শাশুড়ি জেকি আক্তারের বাড়িতে যান।
কারণ জেকি আক্তারের কথা জহিরুলের শাশুড়ি ও স্ত্রী গুরুত্ব দেয়।
ওইদিন প্রথমে সকালে গিয়ে জেকির সঙ্গে কথা বলে নাস্তা করে চলে যান জহিরুল। পরে আবার রাত ৮টার দিকে জেকির বাড়িতে যান।
তখন পারিবারিক কলহের বিষয়টি নিয়ে কথা বললে একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ঝামেলার সৃস্টি হয়।
সেসময় জহিরুলের রাগ মাথায় উঠে যায়, তখন সে ঘরে থাকা দা দিয়ে জেকি আক্তারকে কুপিয়ে হত্যা করেন ।
এ সময় মায়ের চিৎকার শুনে বড় ছেলে মাহিন ছুটে আসলে তাকেও একটি কোপ দেয়।
তখন সে প্রাণে বাঁচার জন্য দৌড়ে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করতে গেলে তাকেও কুপিয়ে হত্যা করেন।
অন্য ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল ৬ বছর বয়সী মহিন ও ৭ মাসের ওজিহা।
তখন ঘুম থেকে উঠে পড়ে মহিন। দেখে ফেলে হত্যার ঘটনা। পরে ঘরের দরজা বন্ধ করে ভয়ে পায়চারি করে মহিন।
সে সময় দরজা খুলতে দেখে ভয়ে বাথরুমে গিয়ে লোকায় মহিন। সেখানে গিয়ে তাকেও কুপিয়ে হত্যা করেন জহিরুল।
তারপর আধাঘণ্টার মত সেই ঘরে পায়চারি করেন। পরে রাত ১টার দিকে পালিয়ে যান জহিরুল।
আরও পড়ুন:
- খাগড়াছড়িতে যাত্রীবাহী উল্টিয়ে নিহত ১, আহত ১৪
- স্কুল ছাত্রী স্ত্রীকে খুন করে পালালো স্বামী
- নড়াইলে ভাড়া বাসা থেকে কলেজ শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার সিরাজুল ইসলাম বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর সকাল থেকে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশের বিশেষ শাখা কাজ করেছে।
এর আগে প্রাথমিক অবস্থায় তিনজনকে জবাবদিহিতার জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
পরে আলামত, সুনির্দিষ্ট সোর্স ও তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতা নিয়ে জানতে পারি জহিরুলের সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি।
পরে রাতেই নরসিংদীর মধাবদী থেকে তাকে আটক করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আনা হয়।
তখন পুলিশের কাছে প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন জহিরুল।
তবে এ ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কিনা সে বিষয় নিয়ে আরও তদন্ত করা হবে।
গতকাল মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সকালে প্রবাসী শাহ আলমের বসতঘর থেকে তার স্ত্রী জেকি আক্তার ও দুই ছেলে মাহিন এবং মহিনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।